তাঁহার মোবারক নাম ইউখান্দ। সেই যমানার পন্ডিতগণ ফেরআঊনকে আতম্কিত করিয়াছিল যে, বনি ইসরায়ীল কওমে এক ছেলের জন্ম হইবে। আর সেই ছেলে তোমার এই সোনার বাদশাহী ধূলিসাৎ করিয়া ফেলিবে। এই ভবিষ্যদ্বাণী ফেরআঊনকে ভীষণ সন্ত্রস্ত করিয়া তুলিল। সে সমস্ত রাজকীয় লোকদের হুকুম করিল, বনি ইসরায়ীল কওমের ছেলে সন্তানদিগকে সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করিয়া ফেলিতে।হুকুম পালনার্থে বনি ইসরায়ীলের হাজার হাজার মাছুম ছেলে সন্তানকে হত্যা করা হইল। এই নির্মম হত্যাকান্ড কালের পর কাল, দিনের পর দিন ধরিয়া চলিতে লাগিল। কোন সন্তানকেই এই চরম নিষ্ঠুরতা হইতে রক্ষা করা কাহারো পক্ষে সম্ভব ছিল না। ঠিক এই ভয়াবহ মুহূর্তে হযরত মূসা (আঃ) জন্ম নিলেন বনি ইসরায়ীল কওমে। হযরত মূসার মাতার নিকট আল্লাহ্ তাআলার তরফ হইতে এলহাম হইলঃ তুমি নিশ্চিন্তে ছেলেকে স্তন্য পান করাইতে থাক যখন আশংকা হয় যে, ছেলের জন্ম সংবাদ শীঘ্রই প্রচার হইয়া যাইবে, ফলে ফেআঊনের লোক আসিয়া তাহাকে হত্যা করিয়া ফেলিবে, তখন তুমি ছেলেকে সিন্দুকে ভরিয়া দরিয়ায় ভাসাইয়া দিও। ইহার পর ছেলেকে পুনরায় তোমার নিকট পৌঁছাইয়া দেওয়া আমার দায়িত্বে রহিল। একদিন সত্য সত্যই মাতা মূসা (আঃ) কে সিন্দুকে ভরিয়া অসীম অতল সাগরে ভাসাইয়া দিলেন। অবশেষে দেখা গেল, আল্লাহ্ তা'আলারও স্বীয় ওয়াদা যথাযথ পুরা করিলেন। এখানে প্রণিধানযোগ্য ইহাই যে, অবলা একজন নারী -কিন্তু তাঁহার ঐশীপ্রেম ও আত্নবিশ্বাস কত প্রবল! আল্লাহর আদেশ রক্ষার্থ সদ্যপ্রসূত দুগ্ধপোষ্য শিশুকে সিন্দুকে ভরিয়া তরঙ্গমালা বিক্ষুদ্ধ বিশাল সাগর বক্ষে নিক্ষেপ করিলেন। আল্লা হ্ তা'আলাও বান্দার কৃতকার্যে সন্তুষ্ট হইয়া পুরষ্কার দান করিলেন।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment